সকল খবর দেশের খবর

ভেঙ্গে ফেলা হলো কবি রফিক আজাদের স্মৃতিস্মারক বাড়ির একাংশ!

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ১৬-৪-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০৩৬

ঢাকার ধানমণ্ডিতে কবি রফিক আজাদের স্মৃতিবিজড়িত বাড়ির একাংশ গুঁড়িয়ে দিয়েছে গৃহায়ন অধিদপ্তর। প্রায় তিন দশক সপরিবারে বসবাস করা বাড়িটির পূর্বাংশের দুটি ইউনিট বুধবার সকালে ভাঙা হয়।

প্রয়াত কবি রফিক আজাদ এই বাড়িতেই লিখেছেন তার অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ কবিতা ও কাব্যগ্রন্থ। কবির স্ত্রী দিলারা হাফিজ বর্তমানে বাড়িটির একটি ইউনিটে বসবাস করছেন।

বাড়িটি ১৯৮৮ সালে সাময়িক বরাদ্দ পেয়েছিলেন দিলারা হাফিজ, যখন তিনি ইডেন কলেজে প্রভাষক ছিলেন। বরাদ্দপত্রে স্পষ্ট লেখা ছিল—এই বরাদ্দে মালিকানা দেওয়া হবে না, তবে বসবাস করা যাবে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত।

২০১২ সালে সৈয়দ নেহাল আহাদ নামে একজন ব্যক্তি বাড়িটির মালিকানা দাবি করে আদালতে যান এবং রায় পান। এরপর দিলারা হাফিজ আদালতে মামলা করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে।

আদালত বাড়িটির ওপর ‘স্থিতাবস্থা’ জারি করেন, যা এখনো চলমান। মামলাটি বর্তমানে ঢাকার সপ্তম সহকারী জজ আদালতে বিচারাধীন, আগামী ২৫ মে সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে।

এই অবস্থাতেই বুধবার সকালে বাড়ির পূর্বাংশের দুটি ইউনিট ভাঙে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে দিলারা হাফিজ বলেন, “এটা কেবল একটা বাড়ি না, রফিক আজাদের জীবন, সাহিত্য, স্মৃতি। চোখের সামনে সব গুঁড়িয়ে গেল।”

তিনি আরও জানান, “গতকালও আমি গিয়েছিলাম মন্ত্রণালয়ে স্মৃতি সংরক্ষণের অনুরোধ জানাতে। ভাবিনি মামলার মাঝপথেই ভাঙা শুরু হবে।”

রফিক আজাদ বাংলা সাহিত্যের অন্যতম আধুনিক কবি ছিলেন। পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ বহু সম্মাননা। ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধাও।

বর্তমানে কবির দুই সন্তান অভিন্ন আজাদ ও অব্যয় আজাদ প্রবাসে রয়েছেন।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও গৃহায়ন অধিদপ্তরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। একজন সাহিত্যিকের স্মৃতি রক্ষায় রাষ্ট্রের এ ধরনের উদ্যোগ হতাশাজনক বলে মনে করছেন সংস্কৃতিসেবীরা।

দিলারা হাফিজ জানিয়েছেন, তিনি আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন এবং বাড়িটির স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন।