প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচন ঘনিয়ে আসার প্রেক্ষাপটে ষড়যন্ত্র তীব্র হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে পুলিশকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যুদ্ধাবস্থায় আছি। এই বাস্তবতা মনে রেখেই পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। ষড়যন্ত্রকারীরা এই সুযোগে শান্তি বিনষ্টের চেষ্টা করবে, তাই পুলিশকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে।’
সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে মাঠপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বিশেষ বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা পুলিশের ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘পুলিশই সম্মুখ সারির মানুষ। তাদের অবহেলা করে দেশ গড়া সম্ভব নয়। আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ করা গেলে, শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত করা গেলে, সব যুদ্ধেই জয়ী হওয়া সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ গড়তে পুলিশকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। অতীতে পুলিশ খারাপ মানুষের প্রভাবের শিকার হয়েছে, কিন্তু এখন আলোকিত বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্বও তাদের কাঁধে।’ প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের বিশাল সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘বাংলাদেশ এক বিশাল সম্ভাবনার দেশ। কিন্তু সেই সম্ভাবনা আমরা এখনো বাস্তবে রূপ দিতে পারিনি। জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে নতুন করে দেশ গড়ার সুযোগ এসেছে, এই সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে।’
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। এছাড়া মাঠপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ ও রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি ফারজানা ইসলাম বক্তব্য রাখেন।
প্রধান উপদেষ্টা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন ও বাস্তবতা নিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে বিশ্ব নেতৃত্বের পর্যায়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে, শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং জনগণের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।’
নির্বাচনী প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে এই বৈঠকে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা পুলিশকে নির্বাচনকালীন সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী পরিবেশ শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ রাখতে পুলিশকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে।’